PATIENCE IS A FRIEND | ক্রোধ শত্রু ধৈর্য মিত্র



একবার এক রাজকুমারের অনেক সখ হল একটি তুতা পাখি পালাবার, তখন রাজাকে অনুরােধ করল যেন তাকে একটি তুতা পাখি এনে দেয়, রাজকুমারের অনুরােধ শুনে রাজা আনন্দের সহিত মন্ত্রিকে আদেশ করেন, খুব শিঘ্রই এক তুতা পাখি নিয়ে আসতে, তখন মন্ত্রি মশায় দেরি না করে, বনে বেড় হলেন, আর সুন্দর এক তুতা পাখির বাচ্চা নিয়ে আসলেন, আর এনে রাজকুমারের হাতে দিলেন, রাজকুমার এতটা খুশি হল যা বলে বুঝানাে সম্ভব হবে না,

রাজকুমার এটিকে খুব যত্নসহকারে বড় করলেন, আর নিজের বস মানিয়ে নিলেন, রাজকুমারও বড় হলেন, তুতা পাখিও বড় হল, একদিন রাজকুমারের বনে শিকার করার জন্য ইচ্ছা হল, তখন তার প্রিয় তুতা পাখিটিকে নিয়ে বেড় হয়ে গেলেন, শিকার খুজে পাচ্ছেন না, খােজ করতে করতে খুবই টায়ার্ড হয়ে গেলেন, আর জল তৃষ্ণা ও প্রচন্ড পেয়েছে, তখন একটি বট গাছের নিচে বসলেন বিশ্রাম করতে, সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পায়, উপর থেকে এক ফুটা এক ফুটা করে জল পরছে, তখন সঙ্গে সঙ্গে রাজকুমার পাত্র বেড় করে সেই জল গুলি সংগ্রহ করলেন, পাত্রটি তৃষা মেটানাের মত জলে পূর্ন হয়েছে, রাজকুমার উৎসাহের সহিত সেই পাত্রটি হাতে নেবে, ঠিক সেই মুহূর্তে, জলে ভর্তি হওয়া পাত্রটি তুতা পাখিটি ফেলে দেয়,

রাজকুমার তখন অনেক ক্রদ্ধ হয়ে গেলেন, আর ক্রোধকে সহ্য করতে না পেরে নিজের হাতে থাকা ধারালাে অস্ত্রটি দিয়ে তুতা পাখিটিকে জোড়ে আঘাত করেন, আর তুতা পাখিটিকে মেরে ফেললেন, আর হয়েছে এমন জলের ফুটাও শেষ হয়ে গেছে, তখন তিনি নিজেই সেই বট গাছটিতে উঠে, যে জায়গা থেকে জলের ফুটা পরছে, সেই জলের উৎস থেকে সরাসরি জল নিতে গেলেন,তখন তিনি দেখতে পান, এক বিশাল আকারের কাল নাগ, তার বিষ ত্যাগ করছে, আর তা জলের ফুটা হিসাবে বট গাছের নিচে পরছে, রাজ কুমার ভয়ে নিচে নেমে যায়, আর তার চোখ পরে সেই আদরের তুতা পাখিটির উপর! তখন সেই তুটা পাখিটি হাতে নিয়ে জোরে জোরে চিৎকার করে বলছে, এ আমি কি করলাম!

বন্ধুগন আপনার কি মনে হয়? এটি কি শুধু একটি গল্প মাত্র?? বন্ধুগন! এর পেছনে অনেক বড় এক মেসেজ লুকিয়ে। আছে, ক্রোধ যে এক বড় শত্রু! আর ধৈৰ্য্য যে এক সত্যিকারের মিত্র! তার উদাহরনই এই গল্পটি থেকে আমরা পেয়ে থাকি, আজ দেখতে পাবেন, যারা ক্রোধের বসে এমন অনেক কাজ করে বসে, পরবর্তিতে সংসার বা পরিবার তাে ছাড় খার হয়ে যাবেই! এমন কি কর্ম দোষে জেলে ও যেতেহয়!যখন ব্যক্তি ক্রোধের বসে কোন এক অন্যায় কাজ করতে যায়, ঠিক সেই মুহূর্তে অন্যায়কারি ব্যক্তির মনে হয়, সামনের ব্যক্তি আমাকে প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে, এই মুহূর্তে যা আমার প্রয়ােজন তা দিচ্ছে না,

কিন্তু একবারও তার মনে আসে না, এই দুনিয়াতে আমার বলতে কিছু নেই, যা কিছু আমার ভাবচ্ছি তা বাস্তবে আমার না, যদি এই বিষয়টি বুঝতে পারত তাহলে ব্যক্তি নিজের ক্রোধকে নিজের বসে রাখতে পারত, আরেকটি হল ধৈৰ্য্য! তার তাে তুলনাই চলে না! আজকাল এই দুনিয়াতে যদি কিছু কম থাকে, তাহলে আমার মনে হয় তা হলাে ধৈৰ্য্য, বর্তমান আধুনিকতার যুগে, কম্পিটিশানের যুগে, মানুষ কোন কিছুতেই মন স্থির করতে পারে না,

আপনি যদি শুরুতেই ছাত্রদের কথা ভাবেন, তাহলে দেখা যায় তারা পড়া শুনাতে মন স্থির করতে পারছে না, কোন একটি সাবজেক্ট নিয়ে যখন বসে, কিছুক্ষন পরেই ধৈর্য হারিয়ে, অন্য সাবজেক্টে মন দিতে যায়, কিছুক্ষন পড়লেই মন চঞ্চল হয়ে যায়, পড়া থেকে দ্রুত উঠে যায়! শুধু ছাত্ৰই না, পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যেই আজ, এক অস্থিরতা বয়ে চলছে, কোন কাজেই মন বসচ্ছে না, একটি কাজ যদি শুরু করে তা সম্পূর্ন না করেই অন্য কাজ শুরু করে, এর ফলে কোন কাজই সম্পূন হয় না, এর ফলে কাজের অস্থিরতা আর বেড়ে যায়,

কিন্তু প্রশ্ন হল কিভাবে নিজেকে সার্বিক ভাবে কন্ট্রোল করা যাবে? বন্ধুগন নিজেকে কন্ট্রোল করতে হলে প্রথমে নিজের মনকে কন্ট্রোল করা জানতে হবে! আর তা হবে একমাত্র নিজের পরিচয়কে জানার মাধ্যমে! নিজের সঠিক পরিচয় পাওয়ার মাধ্যমে, আমি যা বুঝাতে চাইছি অনেকে হয়তাে বুঝে গেছেন আসলে আমি আপনার বাহ্যিক পরিচয়টিকে বুঝাতে চাইছি না, আপনার অভ্যন্তরে বসে থাকা সেই শক্তিকে বুঝাতে চাইছি, যাকে আমরা আত্মা বলে জানি,আর সেই আত্মার পরিচয়কে জানার সহজ উপায় হল আত্ম জ্ঞান বা আত্ম অনুভুতির দ্বারা, যা মেডিটেশানের মাধ্যমেই সম্ভব!


No comments:

Post a Comment