মিথ্যা অভিমান, একটি হাতি আপন গতিতে খুব সুন্দর ভাবে চলছিল হঠাৎ একটি মাছি, হাতির উপর এসে বসলাে, হাতি বুঝতেই পারে নি, মাছি কখন বসেছে, মাছি অনেক ভন ভন শব্দ করছিল, আর বলছে ভাই! আমাকে নিয়ে চলতে তুমার যদি কোন, সমস্যা হয়, তাহলে আমাকে বলবে কিন্তু, কারন আমার ওজন নেহাত কম নয়, কিন্তু হাতি কিছু শুনতেই পায়নি, ঠিক ঐ সময় হাতিটি এক ব্রিজের উপর দিয়ে যাচ্ছিল, নীচে অনেক বড় পাহাড়ি নদী ছিল, ভয়ঙ্কর গর্ত ছিল, মাছি বলছিল দেখ ভাই,আমার কিন্তু ভয় হচ্ছে? আমরা দুইজন!
ব্রিজের উপর দিয়ে যাচ্ছি, ব্রিজ ভেঙ্গে যাবে না তাে? ভাই যদি এমন কিছু ভয় মনে হয়, তাহলে আমাকে আগে থেকেই কিন্তু বলে দিও, আমার কাছে পাখা আছে আমি উরে যেতে পারব, ওজনটা অনেক কমবে,তুমি সচ্ছন্দে ওপার যেতে পারবে! হাতির কানে হালকা হালাক ভন ভন শব্দ আসে, কিন্তু সে তাতে কোন ধ্যান দেয় নি, এখন মাছির যাওয়ার সময় এসে গেছে, সে বলেছে যাত্রা অনেক আনন্দ পূর্ন হয়েছে, তুমি আমার খুব কাছের বন্ধু হয়েছ, আমি এখন যাচ্ছি !
কিন্তু কোন কাজে যদি আমার দরকার পরে, তাহলে আমাকে বলবে আমি তােমাকে সাহায্য করবাে, তখন মাছির শব্দ হালকা হালকা হাতির কানে আসে, হাতি বলল তুমি কে? তাতাে আমি জানি না, কখন এসেছ? তাও আমি জানি না? কখন আমার শরীরে এসে বসেছ , কখন আর উরে গেছ তা আমি কিছু বুঝতেই পারিনি, মাছি, হাতির ঐ উক্তিতে লজ্জিত হয়ে উড়ে গেল! বড় বড় সাধু সন্তরাও নিরহংকারী হয়ে বলে, আমরা ও ঠিক মাছির মতই , এত বড় পৃথিবীর মধ্যে, থাকা আর না থাকার কোন পার্থক্যই পরে না, হাতি আর মাছির অনুপাতের থেকেও অনেক ছােট,বিজ্ঞানী এত জ্ঞানী হয়ে ও বলেছেন আমার জ্ঞান সমুদ্রের এক বালু কনার চেয়ে ও কম, সাধুরা আরও বলে ,আমরা আর ব্রহ্মান্ডের অনুপাত,আমরা না থাকলেই বা পৃথিবীর কি হবে !
কিন্তু আমরা অনেক বড় হইচই করতে থাকি,এই হইচই কিসের জন্য? গল্পটিতে মাছি হাতির সাথে নিজেকে সমান করতে চেয়েছে, নিজেকে হাতির সাথে তুলনা করতে থাকে, একবারও ভাবে নি হাতির তুলনায় নিজের স্থিতি কি? আমাদের অহংকার একা বাচতে পারে না, অন্যরা যদি তাকে বিশ্বাস করে, তবেই অহংকার বেচে থাকতে পারে !
সাধু সন্তরা বলেন আমরা বস্ত্র পরিধান করি অন্য ব্যক্তিকে দেখানাে জন্য, স্নান করি এবং নিজেকে সজ্জিত করি কারন অন্য ব্যক্তি যাতে আমাদের সুন্দর বলে, ধন সম্পদ জমা করি , ঘর তৈরি করি অন্য ব্যক্তিকে দেখানাের জন্য, অন্য ব্যক্তি যাতে দেখে আর স্বিকার করে যে তুমি এক বিশেষ ব্যক্তি না কোন সাধারন লােক,সাধুরা বলে তুমি মাটির দ্বারাই তৈরি হয়েছ !
আর মাটিতেই মিশে যাবে, তুমি অজ্ঞানতার কারনেই নিজেকেই বিশেষ দেখাতে চাইছ, তা নাহলে তাে, তুমি শুধু এক মাটির পুতুলই কেবল, তা ছাড়া আর কিছুই না, অহংকার সব সময় এটিই খােজ করতে থাকে, যাতে কোন ব্যক্তি এমন ভাবেই আমাকে আশ্রয় দেয়, বিদ্বানরা বলে, মনে রাখবে আত্মা চলে যাওয়ার পরই এই মাটির পুতুল মাটিই তৈরি হয়ে যাবে, এই জন্যই আপনাদের ভুল অহংকারকে ছেড়ে দিন,আর সকলের সম্মান করুন।
No comments:
Post a Comment